হারিয়ে যাওয়া শহর নিয়ে মানুষের জল্পনা-কল্পনা বহু পুরাতন। ইতিহাস ও লোককথা আমাদের পরিচয় করিয়ে দেয় সুপ্রাচীন এমন অনেক জমকালো নগরীর সাথে, উৎকর্ষের চূড়ান্তে যারা ছিল নিজ নিজ সভ্যতার মুকুট। এল-ডোরাডোর কথা কে শোনেনি, যদিও উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে এখন পর্যন্ত এর কাহিনী উপকথা হিসেবেই বিবেচিত। ট্রয় আবিষ্কারের আগপর্যন্ত হোমারের ইলিয়াড ও ওডিসিও অনেক বিশেষজ্ঞই গালগপ্পো হিসেবেই উড়িয়ে দিতেন।
আরবের মরুভূমিতে হারিয়ে যাওয়া ইরাম আর উবার, মিশরের হেরাক্লিয়ন, থিবস, গ্রিসের মাইসেনিয়া, রাজা মিডাসের রাজধানী গর্ডিয়াম অথবা ইসরায়েলের মেগিড্ডো সবই ইতিহাসের পাতায় বর্ণিত আছে। কিন্তু আটলান্টিস নিয়ে মানুষের আগ্রহ আর সমস্তকেই ম্লান করে দেয়। সাগরের অতল থেকে মাথা তোলা আটলান্টিস দ্বীপ আবার ফিরে গিয়েছিল সাগরের কোলে। এর অস্তিত্ব আর অবস্থান অপ্রমাণিত, কিন্তু তা মানুষের অভিযানে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। আটলান্টিস নিয়ে বড় বড় বিশেষজ্ঞ বই রচনা করেছেন, প্রচুর অর্থ ব্যয় করে চালানো হয়েছে আটলান্টিস খুঁজে বের করবার মিশন। অ্যাডভেঞ্চার ঘরানার উপন্যাস ঘাঁটলে শুধু আটলান্টিস নিয়েই মনে হয় শতাধিক গল্প লেখা হয়েছে। চলুন আজ আমরা ঘুরে আসি কিংবদন্তীর সেই আটলান্টিস থেকে।
আটলান্টিসের কাহিনীর উৎস
আজকে আটলান্টিস সম্পর্কে আমরা যা জানি তার প্রায় পুরোটাই প্লেটোর (৪২৯-৩৪৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) রচনা থেকে আসে। প্লেটো ছাড়া আর কোনো দার্শনিক বা ঐতিহাসিক থেকে সেভাবে লিখিত আকারে আটলান্টিসের বর্ণনা পাওয়া যায় না। আটলান্টিসের কথা প্রথম বলা আছে প্লেটোর সংলাপ টিমিয়াসে, পরে যা আরেকটু বর্ধিত আকারে পাওয়া যায় তারই রচিত অন্য এক সংলাপ ক্রিটিয়াসে। দুঃখের ব্যাপার হলো তার সম্পূর্ণ সংলাপ কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে, ফলে আটলান্টিসের বর্ণনা রয়ে গেছে অসম্পূর্ণ। তারপরেও যা পাওয়া যায় তাকে জোড়াতালি দিয়ে মোটামুটি একটি চিত্র দাঁড়ায়।
টিমিয়াসে সক্রেটিসের সাথে টিমিয়াস নামে কাল্পনিক এক দার্শনিকের আলাপচারিতার প্রথমদিকে ক্রিটিয়াস নামে আরেক দার্শনিক আটলান্টিসের কথা উচ্চারণ করেন। ক্রিটিয়াসে মোটামুটি বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া হয়, যেখানে হিমোক্রেটিস নামে আরেক ব্যক্তি ক্রিটিয়াসকে অনুরোধ করেন আটলান্টিসের বিবরণ দিতে। ক্রিটিয়াস দাবী করেন, এই কাহিনী তার বংশ পরম্পরায় চলে আসছে। তার পরদাদা ড্রোপিডেস এই গল্প শুনেছেন বিখ্যাত এথেনিয়ান আইনজ্ঞ সোলনের কাছ থেকে। সোলনের সময়কাল ছিল আনুমানিক ৬৪০-৫৬০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত। সোলনের জবানীতে বলা হয় তিনি আবার আটলান্টিসের ঘটনা শুনেছেন মিশরের সাইস শহর পরিভ্রমণের সময় সেখানকার মন্দিরের পুরোহিতদের থেকে। এই পুরোহিতেরা নিজেদের দাবি করতেন সুপ্রাচীন ইজিপশিয়ান হাই-প্রিস্ট ইমহোটেপের উত্তরসূরি বলে। তারা ইমহোটেপের থেকে এই গল্প চলে আসছে বলে সোলনকে জানান।
সাইসের পুরোহিতেরা সোলনের এথেনিয়ান পরিচয় জানতে পেরে তাকে যথেষ্ট সমাদর করেন। তারা এথেনিয়ানদের প্রশংসা করতে থাকলে সোলন এর কারণ জানতে আগ্রহী হন। বয়োবৃদ্ধ এক পুরোহিত তাকে তখন শোনালেন এক রক্তক্ষয়ী সংঘাতের কথা, যার পটভূমি ভয়াবহ এক বন্যার তোড়ে পৃথিবী ডুবে যাবারও আগের। সেই সময় এথেন্সবাসীরাই এক আগ্রাসি শক্তির হাতে দাসত্ব থেকে ইজিপ্ট আর গ্রীসের অন্যান্য অঞ্চলকে রক্ষা করেছিল। সেই আগ্রাসি শক্তির নাম আটলান্টিস, যা গড়ে উঠেছিল তাদের সময় থেকে থেকে প্রায় ৯,০০০ বছর আগে। সেকালে সভ্যতা ও প্রযুক্তির দিকে থেকে আটলান্টিসের সমকক্ষ কেউ ছিল না।
আটলান্টিসের অবস্থান
পিলারস অফ হেরাক্লস, আজকের দিনে যার নাম জিব্রাল্টার, প্লেটোর মতে তার বাইরে সাগরে ছিল সুবিশাল এই দ্বীপ। বর্তমানে একে আমরা জানি আটলান্টিক মহাসাগর বলে। আয়তনে আটলান্টিস ছিল প্রায় লিবিয়া আর এশিয়া মাইনরের সমান। কাজেই এক দ্বীপ না বলে ভাসমান এক মহাদেশ বলাই শ্রেয়।
উৎপত্তি
সময় তখন টাইটানদের। প্রবল বিক্রমে রাজত্ব করছেন ক্রনাস। নিজের ক্ষমতায় কেউ যাতে বাধা হতে না পারে সেটা নিশ্চিত করতে তিনি সদাসতর্ক। ফলে জন্মের পর পরই তার সকল সন্তানের অবস্থান হচ্ছে পিতার উদরে। মা রিয়া অবশেষে কনিষ্ঠ সন্তান জিউসকে রক্ষা করতে সমর্থ হলেন। পরিণত বয়সে জিউস ক্রনাসকে পরাস্ত করে ক্ষমতা দখল করলেন, নিজের ভাই-বোনদেরও উদ্ধার করলেন তিনি। এরপর জিউস ও ভাইয়েরা সাম্রাজ্য ভাগাভাগি করে নেন। অলিম্পাস ও আকাশ হলো জিউসের, মৃতদের জগত পাতালপুরি আর টারটারাস নিলেন হ্যাডেস। পসেইডনের ভাগ্যে পড়লো সুনীল জলরাশি।
সাগরের তলে বাস করতেন পসেইডন। তবে মাঝে মাঝে ঢেউয়ের উপরেও মাথা জাগাতে ভুলতেন না। তিনি দেখতে পেলেন সাগরের মাঝে এক দ্বীপ। এর মধ্যভাগে এক বিস্তীর্ণ প্রান্তর, যেখানে উর্বর মাটিতে জন্মে নানা প্রজাতির গাছপালা। এই প্রান্তরের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে এর পর্বত, যেখানে বাস করে এভেনর আর তার স্ত্রী লিউসিপ্পে। তাদের একমাত্র কন্যা বালিকা ক্লিটো।
ক্লিটোকে চুপি চুপি দেখতেন পসেইডন। এভাবেই একসময় এই মানব কন্যার প্রেমে পড়ে গেলেন দেবতা। এদিকে বয়ঃসন্ধিকালে উপনীত হলে ক্লিটোর বাবা-মা মারা যায়। এরপর পসেইডন ক্লিটোর সাথে মিলনের আকাঙ্ক্ষায় তার আবাস ছেড়ে উঠে এলেন মর্ত্যে। পর্বত আর প্রান্তর ঘিরে তিনি চক্রাকারে তিনটি সাগর সৃষ্টি করলেন। এই তিন সাগরের ভেতরে আর পর্বতের বাইরে আরো দুটি ভূখণ্ড তৈরি করলেন পসেইডন। মূল অংশে তার নির্দেশে মাটির তল দিয়ে প্রবাহিত হল সুমিষ্ট পানি, যার থেকে সৃষ্টি হলো উষ্ণ আর শীতল পানির ফোয়ারা।
ক্লিটোর সাথে পসেইডনের পাঁচ জোড়া যমজ সন্তান জন্ম নেয়।
১) অ্যাটলাস আর ইউমেলেস,
২) অ্যাম্ফেরেস আর এভেমন,
৩) মেনেসাস আর অটোক্যাথন,
৪) এলাসিপ্পাস আর মেস্টর, এবং
৫) আজায়েস আর ডায়াপ্রেপ্স
সন্তানদের জন্য পসেইডন পুরো দ্বীপ দশভাগে ভাগ করলেন। সবথেকে বড় ছেলে অ্যাটলাস পেলেন সবথেকে বড় আর সর্বোৎকৃষ্ট অংশ। তার নামে পুরো দ্বীপের নাম হলো আটলান্টিস, আর এর বাইরের সাগর পরিচিত হলো আটলান্টিক নামে। অন্যান্য ছেলেরাও যার যার অংশ বুঝে পেল। সবাইকে ন্যায়-নীতি বজায় রেখে শাসন করতে বলে পসেইডন ফিরে গেলেন সাগরতলে। বলে গেলেন, কখনো দেবতাদের রুষ্ট করার মতো কিছু না করতে, তাহলে নেমে আসবে ভয়াবহ অভিশাপ।
কেমন ছিল আটলান্টিস
সুবিশাল এই রাজ্য ছিল সুউচ্চ অট্টালিকা আর অঢেল ঐশ্বর্যে পরিপূর্ণ। চারিদিকে সাগর ছাড়াও এর অধিবাসীরা খনন করেছিল অনেক খাল, আর পানির উপর দিয়ে তৈরি করেছিল বিরাট সেতু। উর্বর মাটিতে সারা বছরই জন্মাত নানা প্রজাতির শস্য। গাছপালা আর ফলে ফুলে ভরা ছিল পুরো দ্বীপ। খাবারদাবারের কোনো অভাব ছিল না। পশুপাখিরও ছিল না কোনো কমতি। এমনকি আটলান্টিসে হাতি ছিল বলেও প্লেটো দাবী করেন। এখানকার মাটি ছিল খনিজ পদার্থে সমৃদ্ধ। অধিবাসীরা টিন আর অরিক্যালকাম নামে লাল চকচকে একজাতীয় ধাতু আহরণ করত। আধুনিক ঐতিহাসিকেরা অরিক্যালকামকে ব্রোঞ্জের মতো কোনো সংকর ধাতু মনে করেন, কিন্তু সংকর ধাতু কীভাবে তারা আহরন করত তা নিয়ে বিতর্ক আছে। বলা হয়, হয়তো কাছাকাছি কোনো আগ্নেয়গিরি ছিল, যার অভ্যন্তরের অনবরত রাসায়নিক বিক্রিয়াতে ভূগর্ভস্থ ধাতু অরিক্যালকামে পরিবর্তিত হতো। এছাড়া স্বর্ণ, রৌপ্য, আর ব্রোঞ্জের প্রচুর ব্যবহার ছিল।
রাজপ্রাসাদের চারিদিকে দুর্গের মতো দেয়াল। বাইরের দেয়াল ছিল ব্রোঞ্জের, মাঝের দেয়াল টিনের আর প্রাসাদের দেয়াল তৈরি ছিল অরিক্যালকামে। দ্বীপের মধ্যবর্তী পর্বত তারা পরিণত করে পসেইডনের মন্দিরে। এর দেয়াল ছিল স্বর্ণ ও রৌপ্য পদার্থে নির্মিত আর অরিক্যালকামের কারুকার্যশোভিত। ছাদ ছিল আইভরির, সাথে সোনা আর অরিক্যালকামের খোদাই। মন্দিরের সীমানা প্রাচীর পুরোটাই স্বর্ণের। মন্দিরের ভেতর দেবতা পসেইডনের স্বর্ণনির্মিত মূর্তি অধিষ্ঠিত ছয়টি ডানাওয়ালা ঘোড়ায় টানা এক রথের উপর। এর সাথে একশ সাগরদেবী, প্রত্যেকেই ডলফিনের পিঠে সওয়ার। দ্বীপবাসীরা প্রতি পঞ্চম অথবা ষষ্ঠ বছরে অর্ঘ্য নিয়ে হাজির হতো পসেইডনের মন্দিরে। এখানে দশ অংশের রাজা একটি ষাঁড় উৎসর্গ দিত দেবতার উদ্দেশ্যে।
দ্বীপের প্রতিটি অংশের রাজা ছিলেন স্বাধীন। প্রজাদের উপর ছিল তাদের একচ্ছত্র ক্ষমতা। তিনি ক্ষমতা পরিচালনা করতেন পসেইডনের বলে দেয়া আইনমতে, যা লিখিত ছিল মন্দিরে অরিক্যালকামের এক ফলকে। আটলান্টিসের ছিল শক্তিশালী সেনাবাহিনী। মুহূর্তের মধ্যে তারা হাজির করতে পারত দশ হাজার যুদ্ধরথ। তাদের ছিল বিরাট অশ্বারোহী, পদাতিক আর তিরন্দাজ দল। সামরিক শক্তি আর প্রযুক্তির দিক থেকে আটলান্টিয়ানরা ছিল সমসাময়িক যেকোন সভ্যতার থেকে যোজন যোজন এগিয়ে।
আটলান্টিসের ধ্বংস
পসেইডনের বংশধরেরা বিচক্ষণ শাসনে সমৃদ্ধ এক রাজ্যের পত্তন করেছিল। এর অধিবাসীরা জীবনযাপন করত পাপাচারমুক্তভাবে। কিন্তু মানব স্বভাব তো আর চিরদিন চাপা যায় না। আটলান্টিসের প্রতিপত্তির সাথে সাথে এর বাসিন্দাদের মধ্যে সৃষ্টি হয় অর্থ আর ক্ষমতার লোভ। ক্রমে ক্রমে দেবতাদের ভুলে তারা মগ্ন হয়ে পড়ে পার্থিব ভোগবিলাসে। নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আক্রমণ করে বসে অন্যান্য জাতির উপর। তাদের উন্নত আর শক্তিশালী সেনাবাহিনীর সামনে খড়কুটোর মতো উড়ে যেতে থাকে প্রতিপক্ষের প্রতিরোধ। লিবিয়া, মিশর আর ইউরোপের টাইরেনিয়া (ইতালির এট্রুরিয়া) অবধি আটলান্টিসের সীমানা বিস্তৃত হলো। পরাজিত সব পক্ষের কপালে জুটল নির্মম দাসত্বের যাঁতাকল।
অপ্রতিরোধ্য শত্রুর বিরুদ্ধে একত্রিত হলো হেলেনিক বাহিনী। তাদের নেতৃত্ব বর্তালো এথেন্সের ঘাড়ে। কিন্তু আটলান্টিয়ানদের শক্তির ভয়ে যুদ্ধের মাঠে এথেন্স ছাড়া আর কাউকেই খুঁজে পাওয়া গেল না। এথেন্সবাসী লড়ল বীরের মতো। তাদের তীব্র আঘাতে ভেঙে খান খান হয়ে গেল আটলান্টিসের গর্বের সেনাব্যূহ। শক্তির দম্ভে মদমত্ত আটলান্টিয়ানদের দর্প চুরমার করে তাদের তাড়িয়ে দেয়া হলো হেরাক্লসের পিলারের ওপাশে। অপমানিত, পরাজিত আটলান্টিয়ানরা ফিরে গেল তাদের নিজ রাজ্যে।
কিন্তু তাদের দুর্ভাগ্যের কি শেষ হলো? না। কারণ জিউস অথবা পসেইডন যখন দেখতে পেলেন এই সভ্যতার কী পরিমাণ অবক্ষয় হয়েছে, তারা ক্রোধান্বিত হয়ে পড়লেন। বিশাল দ্বীপ কেঁপে উঠল মুহুর্মুহু ভূমিকম্পে। অগ্নির উদ্গীরণ ঘটিয়ে মাটি ফাঁক হয়ে গেল, আকাশ থেকে নেমে এল অঝোর বৃষ্টি। একদিন একরাতের মধ্যে বিরাট এই সাম্রাজ্যের সলিল সমাধি হলো আটলান্টিকের অতলে। তলিয়ে গেল সুউচ্চ অট্টালিকা, পশুপাখি আর এর অহংকারী বাসিন্দারা। আটলান্টিস পরিণত হলো কিংবদন্তীর নগরীতে, দেবতাদের আক্রোশে যা চলে গেছে সাগর গভীরে।
কোথায় আটলান্টিস
বিশেষজ্ঞরা বারে বারে দাবী করেছেন, প্লেটোর আটলান্টিস কাহিনী একটি রূপক মাত্র। তিনি আসলে একনায়ক কেন্দ্রিক আটলান্টিয়ান শাসনের থেকে এথেন্সের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার শ্রেষ্ঠত্ব বোঝাতে এর অবতারণা করেছেন। কিন্তু এরপরেও আটলান্টিস খুঁজতে কম অভিযান চালান হয়নি। সমস্যা হলো, প্লেটো যেখানে বলেছেন, সেই আটলান্টিক মহাসাগর আয়তনে প্রায় ৪০ মিলিয়ন বর্গ মাইল, কোথাও কোথাও প্রায় তিন হাজার মিটার এর গভীরতা। তারপরেও এর অবস্থান নিয়ে কয়েকটি মতবাদ আছে,
১) ২০১১ সালে স্যাটেলাইট ব্যবহার করে আমেরিকান গবেষকদল দক্ষিণ স্পেনে কাদিজের নিকটবর্তী সাগরের তলে খুঁজে পেয়েছেন ডুবে যাওয়া এক সভ্যতার চিহ্ন।
০২) ক্রিটের ১২০ কিলোমিটার দূরে ইজিয়ান সাগরের থেরা দ্বীপ (বর্তমান ইটালির সান্তোরিনি)। ১৪৭০ খ্রিষ্টাব্দে ভয়াবহ এক অগ্নুৎপাতে এই দ্বীপ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।
০৩) অনেকের মতে, আটলান্টিস আসলে ক্রিট দ্বীপ ঘিরে গড়ে ওঠা মিনোয়ান সভ্যতা। থেরার অগ্নুৎপাত থেকে সৃষ্ট সুনামিতে মিনোয়ানরা ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর গ্রীকরা তাদের আক্রমণ করে সহজেই পরাজিত করে।
০৪) সাইপ্রাস, মাল্টা, এমনকি সিসিলিও আটলান্টিসের সম্ভাব্য অবস্থান বলে বিভিন্ন সময় দাবী করা হয়েছে।
০৫) অ্যান্টার্কটিকা আটলান্টিস হতে পারে বলে কেউ কেউ মত প্রকাশ করেছেন।
আটলান্টিস সত্যি হোক আর কল্পনা, মানুষের কাছে এর আবেদন কখনোই এতটুকু কমেনি। এর সন্ধান চলছে, চলবেও যতদিন পর্যন্ত শক্ত কোনো প্রমাণ পাওয়া না যায়। ততদিন পর্যন্ত আটলান্টিস মানুষের কল্পনাতে রাজত্ব করবেই।
Follow Us